করোনাভাইরাসে ইউরোপের অন্যতম দেশ ইতালি এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে আতঙ্কিত দেশটির ছয় কোটি মানুষ। শুধু বুধবার দেশটিতে মারা গেছেন আরও ৪৭৫ জন এবং নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ২০৭ জন। এখন পর্যন্ত যেকোনো দেশে করোনায় একদিনে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যু ও আক্রান্তের রেকর্ড।
করোনাভাইরাসে চীনের পর বর্তমানে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ইতালি। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৭১৩ জন। এদের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৯৭৮ জন। আর সুস্থ হয়ে এখনো পর্যন্ত বাড়ি ফিরেছেন ৪ হাজার ২৫ জন।
ইতালিতে করোনায় সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী লোম্বারদিয়া অঞ্চল। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু এ এলাকাতেই মারা গেছেন ৩১৯ জন। এখনো পর্যন্ত এ এলাকাতে মারা গেছেন এক হাজার ৯৫৯ জন। বুধবার ইতালির মোদিনা শহরে ৯৫ বছরের এক বৃদ্ধা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।
প্রায় দুই সপ্তাহ ধরেই অবরুদ্ধ গোটা ইতালি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সময়সীমা আরও বাড়ানো হতে পারে। জনগণকে আপাতত বাড়ির বাইরে বের না হতে অনুরোধ জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জোসেপ্পে কন্তে।
তিনি স্বাস্হ্য বিষয়ে অভিজ্ঞদের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করার জন্য সরকারকে সহযোগিতার আহবান জানিয়েছেন। এদিকে ইতালির রাষ্ট্রপতি সেরজো মাতারেল্লা বিশেষ আইন’কুরা ইতালিয়া’ পাশ করেছেন। চীনা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্বিতীয় দলটি ২০টন চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে বুধবার ইতালির বাণিজ্যিক রাজধানী মিলানে পৌঁছেছে। এদিকে ফেয়ারা মিলানে অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে বলে দেশটির স্বাস্হ্য বিভাগ গনমাধ্যমকে জানিয়েছে।
দেশটির ছয় কোটি জনগণ আজ গৃহবন্দি। এর মধ্যে প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশিও রয়েছেন। করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশটিতে জারি করা জরুরি অবস্থার মধ্যে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। গোটা ইতালি এখন থমকে আছে। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। কোনো পর্যটক দেশটিতে প্রবেশ করতে পারছেন না। সরকারের কঠোর নির্দেশনা, অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন ঘর থেকে বাইরে বের না হয়।
গত এক সপ্তাহে অপ্রয়োজনীয় ঘুরাফেরার জন্য ৪৩ হাজার লোকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এনিয়ে দেশটির স্বাস্হ্য বিভাগ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে এখনো বাইরে প্রচুর লোক বিনা প্রয়োজনে ঘুরাফেরা করছে, তা নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। তারা বারবার জনগনকে বিনা প্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন।